‘বাবা, আমি পড়াশোনা শেষ করে ব্যাংকে চাকরি করব। চাকরি পেলে তোমাকে আর কষ্ট করে চায়ের দোকান করতে হবে না’—রাজধানীর রামপুরার তিতাস রোডে নিজের চায়ের দোকানে বসে ছেলের স্বপ্নের কথা বলে বিলাপ করছিলেন আবদুর রহমান। গত ২৯ নভেম্বর রামপুরায় বাসচাপায় নিহত মাঈনুদ্দিন ইসলামের বাবা তিনি। জিপিএ–৪.১৭ পেয়ে এ বছর এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে মাঈনুদ্দিন।
আজ বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে মাঈনুদ্দিনের শিক্ষকেরা এ তথ্য জানান। সে রামপুরার একরামুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
আজ ছেলের এসএসসির ফলের কাগজ লোকজনকে দেখাচ্ছিলেন আর কাঁদছিলেন আবদুর রহমান। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘পুত (ছেলে), তোরে আমি ভিক্ষা করে হলেও পড়াইতাম। তোরে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরি করবি, অভাবের সংসারে হাল ধরবি। কিন্তু আমার সব স্বপ্ন শেষ করে চলে গেলি।’
আবদুর রহমান আরও বলছিলেন, ‘পুত রে, তুই এক মাস ধরে নাই। এখন ভাত না খাইলেও আর কেউ কয় না, আব্বা ভাত খাইতে যাও।’ তিনি বলেন, ‘আমার পুত পরীক্ষা ভালো দিছিল, ভালো কলেজে ভর্তি হতে চেয়েছিল। আমি যদি কলেজে ভর্তির টাকা দিতে না পারি, তাই চারজন প্রতিবেশীর কাছে কলেজে ভর্তির টাকা চেয়ে রেখেছিল।’