সোনার দোকানের সঙ্গে লাগোয়া অন্ধকার একটি ঘরে প্রদীপ জ্বালিয়ে নকশা করতেন স্বর্ণকারেরা। যত বেশি সূক্ষ্ম কাজ, তত মনসংযোগ। বাঁকনল দিয়ে বাতাস করে, সোহাগা দিয়ে সোনা-রুপা গলিয়ে নকশা হতো চিকন সনের ধারালো মুখ ব্যবহার করে। কয়েক দিন কাজের পর ছোট্ট অন্ধকার খুপরির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসত চকচকে এক টুকরো নান্দনিক গয়না। দীর্ঘদিনের এই ধারা যেমন বদলেছে, তেমনি পাল্টেছে মানুষের পছন্দ। সোনা-রুপা হয়ে অগ্রাধিকারে ব্রোঞ্জ, অক্সিডাইজ, তুলা, কাপড়, বীজ, কাঠ, মাটি বা পুঁতির গয়না। অনেকেই বলছেন, গয়না যদি শৈল্পিক না হয়, তাহলে আর বিশেষত্ব কোথায়।
পছন্দের পরিবর্তনটা এবারের ঈদের বাজারেই স্পষ্ট হচ্ছে বেশি। গত দুই বছর করোনা অতিমারির কারণে উৎসবের সময় গৃহবন্দী থাকা মানুষ এবার সাধ ও সংগতির মিল করে ছুটছেন কেনাকাটায়। তবে সে তালিকায় যে সোনার গয়নার আকর্ষণ নেই, তা বোঝা যাচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন সোনার দোকানের কেনাবেচা দেখে।
শুরু হয়েছে সনাতনী আর প্রচলিত নকশার মধ্যে প্রতিযোগিতা। কেন এই বদল, তা সবচেয়ে ভালো জানেন গয়নার নকশা করতে করতে ক্রেতার মনোভাব পড়তে জানা কারিগরেরা। সাভারের ভাকুর্তা গ্রামের বাসিন্দা কারিগর দুলাল রাজবংশীর অভিজ্ঞতা তিন যুগের বেশি। প্রথম আলোকে বলছিলেন, গয়নাপ্রেমীরা এখন পছন্দ করছেন সনাতনী নকশা, যাতে আছে গোলাপ বালা বা কানপাশা।